শুধু ঢাকা মহানগরীতে হাফ ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত নাকচ করে ৯ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল বুধবার সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে নতুন এ ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের কক্ষে বৈঠক শেষ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বেরিয়ে আসে। তারা জানায়, সেখানে গণপরিবহনে হাফ ভাড়াসহ ৯ দফা দাবির বিষয়ে আলোচনা করলেও ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত বা প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।
এর আগে দুপুর ২ টার দিকে স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইনজামুল হকের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের কক্ষে যায়।
পরে ইনজামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা আশানুরূপ ছিল না, আমাদের দাবি মানেননি তারা। দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাসও দেননি। এ কারণে আগামীকাল (বুধবার) সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার পর বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিআরটিএ ভবনের সামনে থেকে আজকের মতো ঘরে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা। তার আগে তারা জানিয়েছে, ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত টানা আন্দোলন-কর্মসূচি চলবে।
শিক্ষার্থীরা যে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছে সেই সেগুলো হলো-
১. দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শিক্ষার্থীসহ সব সড়ক হত্যার বিচার করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
২. ঢাকাসহ সারা দেশে সব গণপরিবহনে (সড়ক, নৌ, রেলপথ ও মেট্রোরেল) শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের চলাচলের জন্য যথাস্থানে ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।
৪. সড়ক দুর্ঘটনায় আহত যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৫. পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং স্পেস নির্মাণ এবং এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।
৬. দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং যথাযথ তদন্তসাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে।
৭. বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএ’র সব কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকাসহ সারা দেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন করতে হবে এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিষয়টিকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে।